রূপসার বাজারগুলিতে নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব ; বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ে বিপাকে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
খুলনা রূপসায় নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার কিছুতেই কমানো যাচ্ছে না। বরং বাজারে পলিথিন আগের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। আগে যে পলিথিন ব্যাগের কেজি ২৫০ টাকা ছিল এখন তা বেড়ে ৩৫০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজার থেকে শুরু করে মাংস, ডিম, তরকারি, পান-সুপারি, ফল, ঔষধ,মিষ্টি ও মনোহারি প্রতিটি দোকানিই পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করছে। উপজেলার বাগমরা বাজার,পূর্ব রূপসা বাজার, ব্যাংক মোড় সন্ধ্যা বাজার, রহিমনগর কাষ্টমঘাট বাজার,ইলাইপুর বাজার,নৈহাটি কালিবাড়ী বাজার,কাজদিয়া বাজার,আলাইপুর বাজার,পালের বাজার,রাজাপুর বাজার,দেয়াড়া বউ বাজার,সেনের বাজার,শিয়ালী বাজারসহ এলাকার সকল বাজার ঘুরে পলিথিনের কেনা বেচার দৃশ্য দেখা যায়।
ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেকে জানান, কাঁচাবাজারে পলিথিন নিষিদ্ধের বিষয়টি তাঁরা শুনেছে। আবার অনেকে বলেন, পলিথিন নিষিদ্ধের বিষয়ে তাঁরা জানলেও বিকল্প না থাকায় বাধ্য হয়ে পলিথিন ব্যবহার করছেন। উপজেলার রূপসা বাজার,আলাইপুর বাজার, কাজদিয়া বাজার,ব্যাংক মোড়ের সন্ধ্যা বাজারগুলোয় দেখা যায়, সবজি, মাছসহ সব ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রেই পলিথিন ব্যাগ দেওয়া হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, আগে কিনে রাখা পলিথিন ব্যবহার করছেন তাঁরা। বিকল্পের ব্যবস্থা না করেই পলিথিন নিষিদ্ধ করায় ক্রেতা-বিক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
রূপসা বাজারে মাছ ও সবজি কিনতে আসা বদিউজ্জামান বলেন, ‘পলিথিন ব্যবহার করতে দিবে না বুঝলাম। কিন্তু বিকল্প তো থাকতে হবে। সেই বিকল্পটা কী? জিনিসপত্রের আকাশ ছোঁয়া দামে এমনিতেই আমাদের নাভিশ্বাস। এর মধ্যে প্রতিবার বাজারের সময় বাড়তি দাম দিয়ে আবার একটা ব্যাগও কিনতে হবে? পূর্ব রূপসা বাজারের মোড়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পলিথিনে পণ্য ভরে ক্রেতাদের হাতে তুলে দেওয়া একজন দোকানদার বলেন ‘আগের কিছু পলিথিন ছিল। সেইগুলা ব্যবহার করতেছি। পলিথিনের বদলে কিসে কইরা মাল দিবো? কাস্টমাররা আইসা বলেন, পলিথিন না দিলে জিনিস নেবো কিসে? বিকল্প তো থাকতে হবে ’।
তবে কয়েকটি দোকানে দেখা যায় নিষিদ্ধ এই পলিথিন ব্যাগের বিকল্প হিসেবে বাজারে কাগজের ঠোঙা (খাম), চটের ব্যাগ, নেট ব্যাগ, ঝুড়ি ইত্যাদি থাকলেও এসব ব্যবহারে মানুষের তেমন আগ্রহ নেই। এর আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান কাঁচাবাজারে পলিথিন নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানান। সে সময় তিনি বলেন, ‘১ নভেম্বর থেকে পলিথিন জাতীয় সব ধরনের ব্যাগ নিষিদ্ধ এবং কোনো ক্রেতাকে এ ব্যাগ দেওয়া যাবে না।’
পলিথিন নিষিদ্ধের বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশে একটা আইন হওয়ার পর নির্দিষ্ট একটা সময় দেওয়া হয়। মানুষকে প্রস্তুত হওয়ার সময় দেওয়া হয়। আর আমাদের দেশে আইন হওয়ার পরেই বলা হয়, অবিলম্বে এই আইন কার্যকর হবে। মানুষ প্রস্তুত হওয়ার সুযোগটা দেওয়া হয় না। তাই সেই আইন মানুষ মানেও না। পলিথিনের ক্ষেত্রেও সেটাই হচ্ছে।’
সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আনায়ারুল কাদের বলেন, বাজারের প্রায় প্রতিটি দোকানেই পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার হচ্ছে। প্রশাসনের তদারকি না থাকায় নিষিদ্ধ এই পলিথিন ব্যবহারে একদিকে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে শহরে ময়লা আবর্জনা জমে ড্রেন বন্ধ হয়ে আছে। রূপসা নদীটিও পলিথিনে ছেয়ে আছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
বঙ্গ নিউজ ওয়েবসাইট থেকে কোনো তথ্য গ্রহণ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আমাদের অনুমতি ব্যতীত বঙ্গ নিউজ ওয়েবসাইটের কোনো সংবাদ, ছবি, ভিডিও বা অন্যান্য কনটেন্ট হুবহু বা আংশিক কপি, সংরক্ষণ, ব্যবহার বা পুনঃপ্রকাশ করা আইনগতভাবে দণ্ডনীয়। এই ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড চিহ্নিত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আমাদের কনটেন্ট ব্যবহার করতে চাইলে অনুগ্রহ করে আগে আমাদের লিখিত অনুমতি গ্রহণ করুন।
বঙ্গ নিউজ কর্তৃপক্ষ

























মন্তব্য: