নিজস্ব প্রতিবেদক:
শারদীয় দুর্গোৎসব কেবল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি এখন হয়ে উঠেছে বাঙালির প্রাণের উৎসব, এক মেলবন্ধনের নাম। আর সেই মিলনের বার্তা নিয়েই বুধবার রাতে খুলনার তেরখাদা ও রূপসা উপজেলার পূজামণ্ডপগুলোতে শুভেচ্ছা সফরে বের হন খুলনা-৪ আসনের বিএনপি দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী পারভেজ মল্লিক। পূজামণ্ডপে গিয়ে তিনি যেন শুধু ফুল বা শুভেচ্ছা নয়, পৌঁছে দেন সৌহার্দ্য, সহমর্মিতা ও হৃদয়ের এক নিঃশব্দ বার্তা—বাংলাদেশ সব ধর্মের মানুষের, আর উৎসব সবার।
বৃষ্টি ধোয়া রাত, বাতাসে ছিল ধূপের গন্ধ আর উৎসবের সুর। সেই আবহেই একে একে তিনি প্রবেশ করেন আলাইপুর বাজার সর্বজনীন পূজা মন্দির, পিঠাভোগ শীতলাতলা নাট মন্দির, ডুবা দক্ষিণপাড়া বাসন্তী সর্বজনীন মন্দির, কোদালধোয়া সর্বজনীন মন্দির, আজগড়া মহামায়া পূজা মন্দির, আজগড়া মল্লিকবাড়ি, প্রগতি যুব সংঘ, ভূজনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণসহ একাধিক পূজামণ্ডপে। প্রতিটি মন্দিরেই তিনি কুশল বিনিময় করেন মন্দির পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে, হাত মেলান স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষের সঙ্গে।
এ সময় তিনি বলেন, “দুর্গাপূজা কেবল ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতির বহমান ধারা। ধর্ম যার যার হলেও উৎসব আমাদের সবার। এই দেশ আমাদের সকলের, এখানে বিভাজনের কোনো স্থান নেই। এখানে ভালোবাসাই হোক সবচেয়ে বড় ধর্ম।”
রাজনীতির পরিচয় ছাপিয়ে পারভেজ মল্লিকের কণ্ঠে সেদিন উচ্চারিত হয়েছিল মানবতার ভাষা। তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সারাদেশে দলীয় নেতাকর্মীরা সচেতনভাবে নজর রাখছেন, যেন দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়। অতীতে রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মীয় উৎসবগুলোর শান্ত পরিবেশকে বিনষ্ট করার চেষ্টার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “এদেশের রাজনীতিতে নতুন ধারা দরকার—যেখানে ধর্মকে নয়, মানুষকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।”
সঙ্গে ছিলেন দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা। তেরখাদা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রবিউল হোসেন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম মোস্তাক আহমেদ, সাবেক প্রচার সম্পাদক শেখ রবিউল ইসলাম লাখু, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি সরদার জিয়াউর রহমান, সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক গোলজার আলম, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আবু খায়ের, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বিষয়ক সাবেক সম্পাদক শেখ লালিম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ শেখ, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) এর সদস্য সচিব মুন্না পারভেজ—তাঁদের আন্তরিক উপস্থিতি মণ্ডপজুড়ে ছড়িয়ে দেয় সৌহার্দ্যর এক আবহ। আরও ছিলেন বাহার মোল্লা, এনামুল শেখ, মো. তফসির ফকির, আজিজ, চৌধুরী সবুজ, জুয়েল, বাবু চৌধুরী, সোহেল, শেখ আসাবুর, সায়েদ, সজীব ও আনোয়ার হোসেন—যারা এই সফরকে করে তুলেছিলেন এক চলমান সম্প্রীতির বহর।
প্রতিটি পূজামণ্ডপেই পারভেজ মল্লিক আর্থিক অনুদান প্রদান করেন এবং আয়োজকদের সঙ্গেও কথা বলেন পূজার নিরাপত্তা ও সার্বিক আয়োজন নিয়ে। তার এই আন্তরিকতায় আপ্লুত হয়ে উঠেন মন্দির কমিটির সদস্যরা। কেউ কেউ আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, “আজকের এই উপস্থিতি প্রমাণ করে রাজনীতি শুধু ভোটের নয়, মানুষের পাশে দাঁড়ানোরও একটা বড় সুযোগ।”
বর্ণময় এই সফরে মিশে ছিল অনাড়ম্বরতা, হৃদ্যতা ও সম্প্রীতির শক্তি। একেকটি মন্দির যেন হয়ে উঠেছিল সহাবস্থানের প্রতীক। ধর্মের ভিন্নতা যেন কোথাও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি—বরং মিলনেরই সেতুবন্ধন তৈরি করেছে। পূজা উদযাপনের ব্যস্ততা ও সাড়ম্বরের মাঝেও পারভেজ মল্লিকের শান্ত, বিনয়ী ও শ্রদ্ধাপূর্ণ উপস্থিতি মানুষকে ছুঁয়ে গেছে গভীরভাবে।
সেই রাতে, প্রদীপের আলো, শঙ্খধ্বনি ও ধুনুচির নাচের মাঝে পারভেজ মল্লিকের সফর ছিল যেন রাজনৈতিক সৌজন্যের চেয়ে বেশি কিছু। এটি ছিল এক প্রার্থনা—শান্তির, সৌহার্দ্যের এবং সম্প্রীতির পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার। তার সফর শেষে অনেকেই বলছিলেন, এমন নেতারাই পারে সাম্প্রদায়িক ঐক্যকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে।
প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান,নির্বাহি সম্পাদক : মোঃ বেনজীর হোসেন,বার্তা সম্পাদক : চন্দন ভট্টাচার্য্য, উপদেষ্টা : এ্যাড. সরদার আবুল হাসেম ডাবলু, উপদেষ্টা : তরুন চক্রবর্তী বিষ্ণু। মোবাইল : 01639924798, অফিস : রামনগর (মজিবর মোড়) , রূপসা, খুলনা।1260