গল্লামারী ব্রীজের দুইপাশে লম্বা লাইনে যানজট, চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন চালক-যাত্রী ও পথচারীরা

মো: মোশারেফ আলী সোহেল :
খুলনার অন্যতম ব্যস্ত এলাকা গল্লামারী ব্রীজের দুইপাশ জুড়ে তীব্র যানজট বেড়েছে। এতে চড়ম ভোগান্তিতে পড়ছে সর্বস্তরের মানুষ। বিশেষ করে স্কুল কলেজ টাইমে বেশ দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। যানজট নিয়ন্ত্রেনে হাঁপিয়ে উঠছে ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তাবৃন্দ।
খুলনা মহানগরীর অন্যতম প্রবেশদ্বার গল্লামারী এলাকা। ময়ুর নদীর ওপর নির্মিত সেতু পার হয়েই শহরে প্রবেশ করতে হয় সাধারণ মানুষের। ব্রীজটি পার হয়েই খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের এরিয়া শুরু। এছাড়াও রয়েছে একাধিক সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান। পাইকারি ও খুচরা বৃহৎ বাজার এবং জনবসতি গড়ে ওঠায় মানুষ ও যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া গত কয়েক বছর ধরে নগরীতে প্রবেশের জন্য এই এলাকা দিয়ে দেশের দাক্ষণাঞ্চলের বিপুল সংখ্যাত মানুষও চলাচল করছে। এ জন্য এই এলাকার যানবাহনের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে প্রতিদিনই গল্লামারী সেতু সংলগ্ন এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লায়ন্স স্কুলের সামনে থেকে গল্লামারি ব্রীজ পার হয়ে খুলনা বিশ^বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশ জুড়ে তীব্র যানজটে রয়েছে। যানজটে এ্যাম্বুলেন্স, স্কুল বাস, ইজিবাইক, গাড়ি, রিকসা, পিকআপ, মাইক্রো ও মটরসাইকেলের দীর্ঘ লাইন রয়েছে। খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের আহম্মেদ জুবায়ের নামের এক ছাত্র বলেন, ‘বিশ^বিদ্যালয়ের সামনে থেকে অটোতে উঠেছি ময়লাপোতা যাবো বলে। কিন্তু বিজের মাথা পর্যন্ত আসতেই ২০ মিনিট লেগে গেলো। অথচ যানজট না থাকলেও এতটুকু রাস্তা পার হতে সময় লাগে মাত্র ৩-৪ মিনিট’।
ছাচিবুনিয়া থেকে আগত নাছরিন সুলতানা নামের এক যাত্রী বলেন, ‘সারারাস্তায় দীর্ঘ যানজট, এই ব্রীজটি পারা-পার হতে সকাল বিকাল অনেক সময় আটকা থাকতে হয়। উপরের কেউ কি এটা দেখছে না ? খুলনা শহরে ঢোকার মতো অবস্থা এখন আর নেই, এতোই জ্যাম, আমার কাছে অনেকটাই রাজধানী ঢাকার মতো মনে হচ্ছে’।
জানা যায়, পাকিস্তান আমলে গল্লামারী এলাকায় ময়ূর নদীর ওপর একটি কংক্রিটের সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে যান চলাচল বৃদ্ধি পাওয়া এবং পুরোনো সেতুটি জীর্ণ হওয়ায় ২০১৫ সালে পুরোনো সেতুটি গাঁ ঘেঁষেই আরও একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এই সেতুটি অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করায় এর নিচ দিয়ে নৌযান চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। এখন দুটি সেতু ভেঙে নতুন ও দৃষ্টিনন্দন সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। যে কারণে দুর্ভোগ বেড়েছে। নতুন সেতু নির্মান ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৫ কোটি টাকা।
খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো: জাকির হোসেন জানান, ‘নগরীর জিরো পয়েন্ট ও গল্লামারী এলাকার যানজটমুক্ত করে নগরীতে সহজ ও স্বস্তিতে যানবাহন ও মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে ফোর লেনের সড়কের পাশাপাশি নতুন আঙ্গিকে দৃষ্টিনন্দন গল্লামারী সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, হাতিরঝিলের আদলে সেতুটির নকশা তৈরি করা হয়েছে। নৌযান চলাচলের সুবিধার্থে এই সেতুর নিচে কোনো পিলার থাকছে না। নতুন এই সেতু নির্মিত হলে গল্লামারী এলাার দৃশ্যপট পাল্টে যাওয়ার পাশাপাশি নগরীর অন্যতম প্রবেশদ্বার এলাকায় মানুষের চলাচল ও যানজট মুক্ত হবে বলে জানান তিনি’।
বঙ্গ নিউজ ওয়েবসাইট থেকে কোনো তথ্য গ্রহণ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আমাদের অনুমতি ব্যতীত বঙ্গ নিউজ ওয়েবসাইটের কোনো সংবাদ, ছবি, ভিডিও বা অন্যান্য কনটেন্ট হুবহু বা আংশিক কপি, সংরক্ষণ, ব্যবহার বা পুনঃপ্রকাশ করা আইনগতভাবে দণ্ডনীয়। এই ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড চিহ্নিত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আমাদের কনটেন্ট ব্যবহার করতে চাইলে অনুগ্রহ করে আগে আমাদের লিখিত অনুমতি গ্রহণ করুন।
বঙ্গ নিউজ কর্তৃপক্ষ

























মন্তব্য: